দশম অধ্যায়
স্থির তড়িৎ
LECTURE SHEET
আধান (Charge) : পদার্থ সৃষ্টিকারী মৌলিক কণিকাসমূহের যেমন : ইলেকট্রন ও প্রোটনের মৌলিক ও বৈশিষ্ট্যমূলক ধর্মকে আধান বলে।
তড়িৎ আবেশ (Electric Induction) : একটি আহিত বস্তুকে কোনো পরিবাহকের নিকটে রেখে আহিত বস্তুর প্রভাবে পরিবাহকটি আহিত করার পদ্ধতিকে তড়িৎ আবেশ বলে।
স্বর্ণপাত তড়িৎবীক্ষণ যন্ত্ৰ (Goldleaf Electroscope): যে যন্ত্রের সাহায্যে কোনো বস্তুতে আধানের অস্তিত্ব ও প্রকৃতি নির্ণয় করা যায় তাকে তড়িৎবীক্ষণ যন্ত্র বলে। বেনেট নামক একজন ধর্মযাজক আধানের উপস্থিতি ও প্রকৃতি নির্ণয়ের জন্য এই তড়িৎবীক্ষণ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন।
কুলম্বের সূত্র (Coulomb's Law) : নির্দিষ্ট মাধ্যমে দুটি আহিত বস্তুর মধ্যে ক্রিয়াশীল আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বলের মান আধানদ্বয়ের গুণফলের সমানুপাতিক, এদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক এবং এ বল আধানদ্বয়ের সংযোজক সরলরেখা বরাবর ক্রিয়া করে।
ধরি, দুটি বিন্দু আধানের পরিমাণ যথাক্রমে q₁ ও q₂ এবং এদের মধ্যবর্তী দূরত্ব d। এদের মধ্যে ক্রিয়াশীল আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বলের মান F হলে কুলম্বের সূত্রানুসারে,
F ∝ C ×( q₁ × q₂ ) / d²
বা, F = C ×( q₁ × q₂ ) / d²
(i)এখানে, C একটি সমানুপাতিক ধ্রুবক,একে k দ্বারা ও প্রকাশ করা হয়, যার মান রাশিগুলোর একক এবং আধানদ্বয়ের মধ্যবর্তী মাধ্যমের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে।
এক কুলম্ব আধান (One Coulomb Charge) : সমপরিমাণ ও সমধর্মী দুইটি আধান শূন্য মাধ্যমে পরস্পর 1m দূরত্বে থেকে যদি পরস্পরকে 9 x 10⁹ N বলে বিকর্ষণ করে তবে আধান দুইটির প্রত্যেককে | কুলম্ব (IC) আধান বলে।
তড়িৎক্ষেত্র (Electric field) : একটি আহিত বস্তুর চারদিকে যে অঞ্চলব্যাপী তার প্রভাব বজায় থাকে
অর্থাৎ অন্য কোনো আহিত বস্তু আনা হলে সেটি আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল লাভ করে সেই অঞ্চলকে ঐ বস্তুর তড়িৎক্ষেত্র বলে।
তড়িৎক্ষেত্রের তীব্রতা (Intensity of Electric Field): তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে একটি একক ধনাত্মক আধান স্থাপন করলে সেটি যে বল লাভ করে তাকে ঐ বিন্দুর তড়িৎ তীব্রতা বা তড়িৎক্ষেত্রের তীব্রতা বলে।
একে ঐ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এটি ভেক্টর রাশি। একক নিউটন/কুলম্ব (NC⁻¹)।
তড়িৎক্ষেত্রের তীব্রতা, E = F / q
তড়িৎ বিভব (Electric Potential) : বিভব হচ্ছে আহিত পরিবাহকের তড়িৎ অবস্থা যা নির্ধারণ করে ঐ পরিবাহকটিকে অন্য কোনো পরিবাহকের সাথে সংযুক্ত করলে আধান প্রবাহিত হবে।
q পরিমাণ আধান পরিবাহিত করতে W পরিমাণ কাজ করলে,
বিভব, V = W / q
বিভব পার্থক্য (Potential difference) : একক ধনাত্মক আধানকে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে স্থানান্তর করতে কৃতকাজের পরিমাণকে ঐ বিন্দুদ্বয়ের বিভব পার্থক্য বলে। বিভব পার্থক্য পরিমাপ করা হয় ভোল্ট এককে।
পৃথিবীর বিভব শূন্য ধরার কারণ : কোনো একটি ছোট আকারের পরিবাহক ধনাত্মক আধান লাভ করলে এর বিভব বৃদ্ধি পায় এবং এর পরিমাণ নির্ণয় করা যায়। কিন্তু পরিবাহকটি যদি অতি বিশাল আকারের গোলক হয় তাহলে এতে ধনাত্মক আধান বৃদ্ধির কারণে বিভব পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না।
আমাদের পৃথিবী এমনি একটি বিশাল আকারের পরিবাহক। এটি একটি ঋণাত্মক আধানের বিশাল ভাণ্ডার। তাই এ থেকে কিছু ইলেকট্রন বের করে নিলে অথবা এতে কিছু ইলেকট্রন দিলে এর বিভবের কোনো পরিবর্তন হয় না। সেজন্য বিভবকে শূন্য ধরা হয়।
কুলম্বের সূত্রের বৈশিষ্ট্য :
১.দুটি বিপরীত জাতীয় আধান পরস্পরকে আকর্ষণ করে আর সমজাতীয় আধান পরস্পরকে বিকর্ষণ করে।
২.শূন্যস্থানে ভেদনযোগ্যতা ε₀ এর মান 8.854 x 10⁻¹² C² N⁻¹m⁻² ।
৩.আধানের একক কুলম্ব (C)।
তড়িৎ আবেশের বৈশিষ্ট্য :
১.একটি অনাহিত বস্তুকে একটি আহিত বস্তুর কাছাকাছি আনলে আবেশের ফলে অনাহিত বস্তু আহিত বস্তুতে পরিণত হয়।
২.আবিষ্ট পরিবাহকের যে প্রান্ত আবেশী বস্তুর নিকটে থাকে সে প্রান্তে আধান আকর্ষণের প্রভাবে স্থান ত্যাগ করতে পারে না।
৩.এরা বন্ধ আধান এবং আবিষ্ট বস্তুর দূরতম প্রান্তে সঞ্চারিত মুক্ত আধান।
তড়িৎক্ষেত্র এবং বিভবের বৈশিষ্ট্য :
১.তড়িৎ বিভব হচ্ছে আহিত পরিবাহকের তড়িৎ অবস্থা যা নির্ধারণ করে ঐ পরিবাহকটি অন্য পরিবাহকের সাথে পরিবাহক যারা যুক্ত করলে তা আধান দেবে বা নেবে। তড়িৎ তীব্রতার একক নিউটন/কুলম্ব (NC⁻¹)
২.অসীম দূরত্ব থেকে বা শূন্য বিভবের কোনো স্থান থেকে এক একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎ ক্ষেত্রের
কোনো বিন্দুতে আনতে সম্পন্ন কাজের পরিমাণই হচ্ছে ঐ বিন্দুর বিভব।
৩.বিভব একটি স্কেলার রাশি, এর একক জুল/কুলম্ব বা ভোল্ট।
এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সুএসমূহ হলো:
এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সকল নোট এর পিডিএফ পেতে এখানে ক্লিক করুন---