একাদশ অধ্যায়
চল তড়িৎ
LECTURE SHEET
চল তড়িৎ (Current Electricity) : কোনো তড়িৎ পরিবাহকের মধ্য দিয়ে যদি মুক্ত ইলেকট্রনের নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ ঘটে, তবে সেই ইলেকট্রনের প্রবাহকে চল তড়িৎ বলে।
তড়িৎপ্রবাহ (Electric Current) : কোনো পরিবাহকের যেকোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে একক সময়ে যে পরিমাণ আধান প্রবাহিত হয়, তাকে তড়িৎপ্রবাহ বলে।
অর্থাৎ, তড়িৎপ্রবাহ, I = Q/t।
তড়িৎপ্রবাহের একক হলো অ্যাম্পিয়ার (Ampere)। একে সংক্ষেপে A দ্বারা সূচিত করা হয়।
অ্যাম্পিয়ার (Ampere) : তড়িৎপ্রবাহের একক অ্যাম্পিয়ার (ampere)। একে A দ্বারা সূচিত করা হয়। শূন্য মাধ্যমে কোনো পরিবাহীর যেকোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে 1 second-এ 1 Coloumb আধান প্রবাহিত হলে যে পরিমাণ তড়িৎপ্রবাহের সৃষ্টি হয় তাকে 1 অ্যাম্পিয়ার ( 1 A) বলে।
পরিবাহী : যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই তড়িৎ প্রবাহ চলতে পারে তাদেরকে পরিবাহী বলে। এসকল পদার্থের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন মুক্তভাবে চলাচল করতে পারে। ধাতব তারের মধ্য দিয়ে আধান ইলেকট্রন দ্বারা পরিবাহিত হয়। এ কারণে ধাতব পদার্থগুলো তড়িৎ সুপরিবাহী। তামা, রূপা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি সুপরিবাহী পদার্থ। যে কারণে বৈদ্যুতিক সংযোগে ধাতব তার ব্যবহার করা হয়।
অপরিবাহী : যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চলতে পারে না তাদেরকে অপরিবাহী বা অন্তরক পদার্থ বলে। অর্থাৎ যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন চলাচল করতে পারে না সেগুলো হলো অপরিবাহী পদার্থ । যেমন : প্লাস্টিক, রাবার, কাঠ, কাচ ইত্যাদি।
অপরিবাহী পদার্থের মধ্যে মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না। প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজে ইলেকট্রন প্রবাহিত হতে পারেন। যার ফলে প্লাস্টিক হলো বিদ্যুতের জন্য অপরিবাহী পদার্থ। এ কারণেই বৈদ্যুতিক মিস্ত্রিগণ যে সকল স্ক্রু ড্রাইভার এবং প্লায়ার ব্যবহার করেন তাদের হাতল প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থে মোড়ানো থাকে। এছাড়া আমরা দৈনন্দিন প্রয়োজনে যে সকল তামার বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করি সেগুলো প্লাস্টিক দ্বারা আবৃত থাকে।
অর্ধপরিবাহী : যে সকল পদার্থের তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতা সাধারণ তাপমাত্রায় পরিবাহী এবং অপরিবাহী পদার্থের মাঝামাঝি, সে সকল পদার্থকে অর্ধপরিবাহী বলে। যেমন : জার্মেনিয়াম, সিলিকন ইত্যাদি। সুবিধামতো অপদ্রব্য মিশিয়ে অর্ধপরিবাহী পদার্থের তড়িৎ পরিবাহকত্ব বৃদ্ধি করা যায়।
বিভব পার্থক্য : পরিবাহী দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের কারণে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। একক ধনাত্মক আধানকে বর্তনীর এক বিন্দু থেকে অপর বিন্দুতে স্থানান্তর করতে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয় তাকে ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য বলে।
বৈদ্যুতিক বর্তনীর দুটি বিন্দুর মধ্য দিয়ে একক ধনাত্মক আধান স্থানান্তরিত হলে যে পরিমাণ তড়িৎশক্তি অন্য কোনো ধরনের শক্তিতে (যেমন : তাপ ও আলো) রূপান্তরিত হয়, তার পরিমাণই ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য।
Q আধান স্থানান্তরের জন্য রূপান্তরিত তড়িৎশক্তির পরিমাণ W হলে, ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য হলো
V = W/Q
তড়িৎ বর্তনী (Electric Circuit) : তড়িৎপ্রবাহ চলার সম্পূর্ণ পথকে তড়িৎ বর্তনী (Electric Circuit) বলে। যখন কোষের পাত দুটিকে বা তড়িৎ উৎসের দুই প্রান্তকে এক বা একাধিক রোধক, তড়িৎ যন্ত্র বা উপকরণের সাথে যুক্ত করা হয়, তখন একটি তড়িৎ বর্তনী তৈরি হয়।
রোধের সমান্তরাল সংযোগ (Parallel Combinations of resistence) : যদি কোনো বর্তনীতে দুই বা ততোধিক রোধ, তড়িৎ উপকরণ বা যন্ত্র এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যেন সব কয়টির একপ্রান্ত একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অপর প্রান্তগুলো অপর একটি সাধারণ বিন্দুতে সংযুক্ত থাকে তাহলে সে সংযোগকে সমান্তরাল সংযোগ বলে।
ও'মের সূত্র (Ohm's Law) : তাপমাত্রা স্থির থাকলে কোনো নির্দিষ্ট পরিবাহকের মধ্য দিয়ে যে তড়িৎপ্রবাহ চলে তা পরিবাহকের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক।
অর্থাৎ, I ∝ V
বা, VI
বা, V = IR এখানে, R একটি ধ্রুবক। এটিকে রোধ বলা হয়।
.•. I = V/R
তড়িচ্চালক শক্তি (Electromotive Force) : এক কুলম্ব আধানকে কোষসমেত কোনো বর্তনীর এক বিন্দু থেকে সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আবার ঐ বিন্দুতে আনতে যে কাজ সম্পন্ন হয় অর্থাৎ, তড়িৎকোষ যে তড়িৎশক্তি সরবরাহ করে, তাকে ঐ কোষের তড়িচ্চালক শক্তি বলে।
তড়িচ্চালক শক্তি, E= W/q। তড়িচ্চালক শক্তির একক হবে JC⁻¹ বা ভোল্ট (V)।
রোধ ( Resistance) : পরিবাহীর যে ধর্মের জন্য এর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয় তাকে রোধ বলে। ও 'মের সূত্র থেকে পাই, R = V/I
রোধের একক ও'ম (Ohm, Ω)
এক ও'মের সংজ্ঞা : কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তে বিভব পার্থক্য 1 Volt হলে এবং এর মধ্য দিয়ে 1A তড়িৎ প্রবাহিত হলে উক্ত পরিবাহীর রোধ
1Ω = 1V/1A = 1VA⁻¹।
তুল্যরোধ : রোধের কোনো সন্নিবেশে রোধগুলোর পরিবর্তে সমমানের যে একটি মাত্র রোধ ব্যবহার করলে বর্তনীর প্রবাহ ও বিভব পার্থক্যের কোনো পরিবর্তন হয় না উক্ত রোধকে ঐ সন্নিবেশের তুল্যরোধ বলে।
ব্যাখ্যা : যদি কোনো পরিবাহীর রোধ R₁, R₂, R₃............. Rₙ প্রভৃতি n সংখ্যক রোধ অনুক্রমিক সন্নিবেশে যুক্ত থাকে, তাহলে তুল্যরোধ Rₛ হবে,
Rₛ = R₁ + R₂ + R₃........... + Rₙ
আবার,, , যদি কোনো পরিবাহীর রোধ R₁, R₂, R₃... Rₙ প্রভৃতি n সংখ্যক রোধ অনুক্রমিক সন্নিবেশে যুক্ত থাকে, তাহলে তুল্যরোধ Rₚ হবে,
1/Rₚ = 1/R₁ + 1/R₂ + 1/R₃ .......... +1/Rₙ
ওয়াট (Watt) : প্রতি সেকেন্ডে এক জুল কাজ করার ক্ষমতাকে এক ওয়াট বলে। বৈদ্যুতিক ক্ষমতার একক ওয়াট (W)।
.•. 1W = 1J/1s =1Js⁻¹
B.O.T একক : এক কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো তড়িৎ যন্ত্র এক ঘণ্টা ধরে যে পরিমাণ তড়িৎ শক্তিকে অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত করে বা ব্যয় করে তাকে 1kWh বা, B.O.T. বলে। সুতরাং, ক্ষমতাকে ওয়াটে এবং সময়কে ঘণ্টায় প্রকাশ করলে,
ব্যয়িত শক্তি; W = Pt Wh = Pt/1000 kWh = pt/1000 B.O.T
220V - 60W এর অর্থ? : কোনো বাল্বের গায়ে 220 V এবং 60 W লেখা থাকলে বোঝা যায়, 220 V বিভব পার্থক্যে বাতিটি সংযুক্ত করলে বাতিটি সবচেয়ে বেশি আলো বিকিরণ করবে এবং প্রতি সেকেন্ডে 60 জুল হারে বৈদ্যুতিক শক্তি আলো ও তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হবে।
অনুশীলনীর সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ তড়িৎ প্রবাহ কাকে বলে?
উত্তর : কোনো পরিবাহীর যেকোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে একক সময়ে যে পরিমাণ আধান প্রবাহিত হয় তাকে তড়িৎ প্রবাহ বলে।
প্রশ্ন ॥ ২॥ তড়িৎ প্রবাহের প্রচলিত দিক এবং ইলেকট্রন প্রবাহের দিক কোনটি?
উত্তর : তড়িৎ প্রবাহের প্রচলিত দিক ধরা হয় উচ্চতর বিভব থেকে নিম্নতর বিভবের দিকে অথবা তড়িৎ কোষের ধনাত্মক পাত থেকে ঋণাত্মক পাতের দিকে। কিন্তু আমরা জানি যে, প্রকৃতপক্ষে তড়িৎ প্রবাহ হলো ঋণাত্মক আধান তথা ইলেকট্রনের প্রবাহের জন্য। ফলে তড়িৎ প্রবাহের প্রকৃত দিক হলো নিম্নতর বিভব থেকে উচ্চতর বিভবের দিকে অর্থাৎ তড়িৎ কোষের ঋণাত্মক পাত থেকে ধনাত্মক পাতের দিকে। সুতরাং তড়িৎ প্রবাহের প্রকৃত দিক প্রচলিত দিকের বিপরীত।
প্রশ্ন ॥ ৩॥ পরিবাহী, অপরিবাহী এবং অর্ধপরিবাহী পদার্থ কাকে বলে?
উত্তর : পরিবাহী : যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই তড়িৎ প্রবাহ চলতে পারে তাদেরকে পরিবাহী বলে।
যেমন : তামা, রূপা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি সুপরিবাহী পদার্থ।
অপরিবাহী : যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন চলাচল করতে পারে না সেগুলো হলো অপরিবাহী পদার্থ। যেমন : প্লাস্টিক, রাবার, কাঠ, কাচ ইত্যাদি।
অর্ধপরিবাহী : যে সকল পদার্থের তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতা সাধারণ তাপমাত্রায় পরিবাহী এবং অপরিবাহী পদার্থের মাঝামাঝি, সে সকল পদার্থকে অর্ধপরিবাহী বলে। যেমন : জার্মেনিয়াম, সিলিকন ইত্যাদি।
প্রশ্ন ॥ ৪॥ ও'মের সূত্রটি বিবৃত কর।
উত্তর : তাপমাত্রা স্থির থাকলে কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে যে তড়িৎ প্রবাহ চলে তা ঐ পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক ।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ দেখাও যে, V = IR ।
উত্তর :
মনে করি, AC একটি পরিবাহী তার। এর দুই প্রান্তের বিভব যথাক্রমে Vₐ এবং V꜀ । যদি Vₐ > V꜀ হয়, তাহলে পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য হবে V = Vₐ - V꜀ । এখন স্থির তাপমাত্রায় পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহ I হলে, ও 'মের সূত্রানুসারে আমরা লিখতে পারি, I ∝ V
বা, I = (1/R) V [ এখানে ধ্রুবক R হলো ঐ পরিবাহীর রোধ ]
.•. V = IR (দেখানো হলো)
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ একটি ছক কাগজে I বনাম V লেখচিত্র অঙ্কন কর। উত্তর : একটি ছক কাগজের X অক্ষ বরাবর পরিবাহীর বিভব পার্থক্য V এবং Y অক্ষ বরাবর তড়িৎ প্রবাহ I স্থাপন করে লেখচিত্র অঙ্কন করলে একটি মূলবিন্দুগামী সরলরেখা পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ আপেক্ষিক রোধের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর : কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একক দৈর্ঘ্য ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট কোনো পরিবাহীর রোধকে ঐ তাপমাত্রায় পরিবাহীর উপাদানের আপেক্ষিক রোধ বলে।
প্রশ্ন ॥ ৮॥ দেখাও যে, শ্রেণি সমবায়ে সংযুক্ত রোধগুলোর তুল্যরোধের মান সমবায়ের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন রোধের মানের যোগফলের সমান ।
উত্তর : চিত্রে রোধক R₁, R₂ এবং R₃ শ্রেণিবদ্ধভাবে সংযুক্ত আছে। রোধগুলো পর্যায়ক্রমে একটির পর অন্যটি সংযুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রত্যেকটি রোধের মধ্য দিয়ে একই মানের তড়িৎ প্রবাহ I প্রবাহিত হচ্ছে
ও'মের সূত্র থেকে আমরা জানি,
R₁ রোধের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য, V₁ = IR₁
R₂ রোধের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য, V₂ = IR₂
R₃ রোধের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য, V₃ = IR₃
সবগুলো রোধের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য অর্থাৎ সন্নিবেশের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য V হলে,
.•. V= V₁ +V₂ +V₃
= IR₁ + IR₂ + IR₃
= I (R₁ + R₂ + R₃)....... (i)
এখন R₁, R₂, ও R₃ মানের রোধ তিনটিকে যদি Rₛ মানের এমন একটি রোধ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয় যে, এতে বর্তনীতে একই প্রবাহ I চলে এবং রোধগুলোর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য V অপরিবর্তিত থাকে তাহলে Rₛ ই হবে এই সন্নিবেশের তুল্যরোধ।
তুল্যরোধের ক্ষেত্রে V = IRₛ................ (ii)
সমীকরণ তুলনা করে পাই,
IRₛ --------------- = I (R₁ +R₂ +R₃)
Rₛ ---------------- = R₁ +R₂ +R₃
তিনটি রোধের পরিবর্তে যদি n সংখ্যক রোধ শ্রেণি সন্নিবেশে যুক্ত থাকে, তা হলে তুল্যরোধ Rs হবে
Rₛ = R₁ + R₂ + R₃ + ........... + Rₙ
অর্থাৎ শ্রেণি সন্নিবেশে সংযুক্ত রোধগুলোর তুল্যরোধের মান সন্নিবেশে অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন রোধের মানের যোগফলের সমান ।
প্রশ্ন ॥ ৯॥ কী কী কারণে তড়িৎশক্তি ব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে?
উত্তর : বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং বর্তনীতে যেকোনো ধরনের ত্রুটি বৈদ্যুতিক শক দিতে পারে এবং অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। শরীরের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে মানুষের মৃত্যুরও ঝুঁকি রয়েছে। তড়িৎশক্তির ব্যবহার নিম্নবর্ণিত তিনটি কারণে বিপজ্জনক হতে পারে।
১. অন্তরকের ৰতিসাধন
২. ক্যাবলের অতি উত্তপ্ত হওয়া
৩. আর্দ্র অবস্থা।
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ একটি বাসের হেড লাইটের ফিলামেন্টের 2.5 A তড়িৎ প্রবাহিত হয়। ফিলামেন্টের প্রান্তদ্বয়ের বিভব পার্থক্য 12 V হলে এর রোধ কত?
উত্তর : দেওয়া আছে, বাহিত তড়িতের মান, A = 2.5 A
বিভব পার্থক্য, V = 12V
রোধ, R = ?
আমরা জানি, ও 'মের সূত্রানুসারে -
V = IR
বা, R = V/I
বা, R = 12v/2.5 = 4.8 Ω
অতএব, রোধ 4.8 Ω
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ একটি শুষ্ক কোষের তড়িৎচালক শক্তি 1.5 V। 0.5 C আধানকে সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আনতে কোষের ব্যয়িত শক্তির পরিমাণ নির্ণয় কর।
উত্তর : দেওয়া আছে, কোষের তড়িচ্চালক শক্তি, E = 1.5 V
আধান, Q = 0.5 C
ব্যয়িত শক্তির পরিমাণ, W= ?
আমরা জানি, E = W/Q
বা, W=EQ
= 1.5 × 0.5 J = 0.75 J
অতএব, ব্যয়িত শক্তির পরিমাণ 0.75 J।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ স্থির এবং পরিবর্তী রোধ কাকে বলে ?
উত্তর : স্থির রোধ : স্থির মানের রোধকের রোধকে স্থির রোধ বলে।
পরিবর্তী রোধ : পরিবর্তী রোধক বা রিওস্টেট প্রয়োজন অনুযায়ী যে বিভিন্ন মানের রোধ প্রদর্শন করে তাদেরকে পরিবর্তী রোধ বলে।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ তড়িচ্চালক শক্তি এবং বিভব পার্থক্য বলতে কী বোঝ ?
উত্তর : তড়িচ্চালক শক্তি: কোনো বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করার জন্য তড়িৎশক্তির প্রয়োজন হয়। কোনো তড়িৎ উৎস একক ধনাত্মক আধানকে বর্তনীর এক বিন্দু থেকে উৎসসহ সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আবার ঐ বিন্দুতে আনতে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে, তথা উৎস যে তড়িৎশক্তি ব্যয় করে, তাকে ঐ উৎসের তড়িচ্চালক শক্তি বলে। যদি Q আধানকে সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আনতে WJ পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয়, তাহলে IC আধানকে সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আনতে কাজের পরিমাণ হবে W/Q । অতএব, উৎসের তড়িচ্চালক শক্তি E = W/Q
একক : তড়িচ্চালক শক্তির SI একক হলো JC-1 যাকে ভোল্ট (V) বলা হয়।
বিভব পার্থক্য : পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের কারণে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। একক ধনাত্মক আধানকে বর্তনীর এক বিন্দু থেকে অপর বিন্দুতে স্থানান্তর করতে যে পরমাণ কাজ সম্পন্ন হয় তাকে ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য বলে। ড্রাইসেল দিয়ে টর্চ জ্বালালে সেল যে তড়িৎ শক্তি সরবরাহ করে তা আলো ও তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। শক্তির এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় শক্তির নিত্যতা সংরক্ষিত হয়। বাল্বের মধ্য দিয়ে একক আধান স্থানান্তরের ফলে যে পরিমাণ শক্তি রূপান্তরিত হয় তার পরিমাণই হলো বাল্বের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য।সুতরাং বৈদ্যুতিক বর্তনীর দুটি বিন্দুর মধ্য দিয়ে একক ধনাত্মক আধান স্থানান্তরিত হলে যে পরিমাণ তড়িৎশক্তি অন্য কোনো ধরনের শক্তিতে (যেমন তাপ ও আলো) রূপান্তরিত হয়, তার পরিমাণই ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য। Q আধান স্থানান্তরের জন্য রূপান্তরিত তড়িৎশক্তির পরিমাণ W হলে, ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য হলো V= W/Q
একক: বিভব পার্থক্যের SI একক হলো ভোল্ট (V)।
এই অধ্যায়ের সকল সূত্রসমূহ:
এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সকল গাণিতিক সমস্যা সমূহের সমাধান এর পিডিএফ পেতে এখানে ক্লিক করুন ---
এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সকল জ্ঞান এবং অনুধাবনমূলক প্রশ্নসমূহের পিডিএফ পেতে এখানে ক্লিক করুন---
এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সকল সৃজনশীল প্রশ্নসমূহের পিডিএফ পেতে এখানে ক্লিক করুন ---
Download Nowজ্ঞানকে নিজের মাঝে সীমাবদ্ধ রাখতে নেই, বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দাও।