ষষ্ঠ অধ্যায়
মোলের ধারণা ও রাসায়নিক গণনা
LECTURE SHEET
অ্যামেদিও অ্যাভোগেড্রো (১৭৭৬-১৮৫৬): ১৮১১ সালে ডাল্টনের পরমাণুবাদ সংশোধন করেন এবং অণুর ধারণা প্রবর্তন করেন। তাঁর মতানুসারে, একই তাপমাত্রা ও চাপে সমান আয়তনের সকল গ্যাসে সমান সংখ্যক অণু থাকে।
এরই ভিত্তিতে তিনি বার্জেলিয়াসের প্রকল্প সংশোধন করে 'অ্যাভোগেড্রো প্রকল্প উপস্থাপন করেন। অ্যাভোগেড্রোই সর্বপ্রথম অণু ও পরমাণু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান করেন, যা রসায়নে বিপ্লব সৃষ্টি করে।
মোল:
•মোল হলো রাসায়নিক পদার্থ পরিমাপের একক।
•মোল শব্দ দ্বারা কোনো রাসায়নিক পদার্থের নির্দিষ্ট পরিমাণকে বোঝানো হয়।
•রাসায়নিক পদার্থের কণা গণনার জন্য মোল একক ব্যবহার করা হয়।
•কোনো রাসায়নিক পদার্থে যে পরিমাণে অ্যাভোগেড্রো সংখ্যক ( 6.02 × 10²³) অণু পরমাণু বা আয়ন থাকে তাকে পদার্থের মোল বলে।
ভর:
•মোলকে পারমাণবিক ভর হিসেবে পরিমাপ করা হয়।
•মোলের সাথে ভরের একক গ্রাম বা মিলিগ্রামের সম্পর্ক রয়েছে। কার্বনের পারমাণবিক ভর 12। অর্থাৎ এক মোল কার্বনে 6.02 × 10²³ টি পরমাণু থাকে যার ভর 12 গ্রাম।
•পানির আণবিক ভর 18। অর্থাৎ এক মোল পানিতে 6.02 × 1023 টি অণু থাকে যার ভর 18 গ্রাম।
মোলার আয়তন:
•এক মোল পরিমাণ পদার্থের আয়তনকে মোলার আয়তন বলে।
•কঠিন, তরল এবং গ্যাসীয় পদার্থের মোলার আয়তন বিভিন্ন হয়।
•কঠিন ও তরল পদার্থের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদার্থের এক মোলের আয়তন বিভিন্ন হয়। কিন্তু প্রমাণ
অবস্থায় বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থের এক মোলের আয়তন সমান হয়।
•পদার্থের আয়তন চাপ ও তাপমাত্রার ওপর নির্ভরশীল।তাপমাত্রা বৃদ্ধি / হ্রাস করলে পদার্থের আয়তন বৃদ্ধি / হ্রাস পায়।
•চাপ বৃদ্ধি করলে গ্যাসের আয়তন হ্রাস পায়।
প্রমাণ তাপমাত্রা ও চাপ:
গ্যাসীয় পদার্থের আয়তন হিসাব করার সময় চাপ ও তাপমাত্রা উল্লেখ করা প্রয়োজন। রাসায়নিক বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে 25°C তাপমাত্রা এবং 1 বায়ুমণ্ডলীয় (1 atm) চাপকে প্রমাণ তাপমাত্রা ও চাপ বলে।
• প্রমাণ অবস্থায় যেকোনো গ্যাসীয় পদার্থের মোলার আয়তন 22.4 লিটার।
•1 মোল বা 44 গ্রাম কার্বন ডাইঅক্সাইডের আয়তন প্রমাণ অবস্থায় 22.4 লিটার।
আণবিক সংকেত:
•আণবিক সংকেত থেকে একটি মৌলের নির্দিষ্ট সংখ্যক পরমাণু অপর মৌলের কতটি পরমাণুর সাথে যুক্ত হয় তা জানা যায়।
• CO₂ অণুতে এক মোল কার্বন পরমাণু দুই মোল অক্সিজেন পরমাণুর সাথে যুক্ত হয়ে এক মোল CO₂ গঠন করে। অর্থাৎ 12g কার্বন 32g অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হয়ে 44g CO₂ গঠন করে।
• যৌগের পরমাণুর মোলসংখ্যার অনুপাত থেকে আণবিক সংকেত নির্ণয় করা যায় ।
দ্রবন:
• দ্রবণে যা কম ব্যবহৃত হয় তা দ্রব আর যা বেশি ব্যবহৃত হয় তা দ্রাবক।
•পানির দ্রবণকে জলীয় দ্রবণ বলে।
•দ্রব ও দ্রাবক মিশ্রিত করে দ্রবণ প্রস্তুত করা হয়।
মোলারিটি:
•প্রতি একক আয়তন দ্রবণে বিভিন্ন পরিমাণ দ্রব দ্রবীভূত করা হলে দ্রবণের ঘনমাত্রা বিভিন্ন হয়।
• দ্রবণের ঘনমাত্রা প্রকাশের একটি রীতি মোলারিটি।
•নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় প্রতি লিটার দ্রবণে দ্রবীভূত দ্রবের মোল সংখ্যাকে দ্রবণের মোলারিটি বলে। একে M দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
•এক মোলার দ্রবণের ক্ষেত্রে এক লিটার দ্রবণে বা এক (ডে. মি.)³ দ্রবণে এক মোল পরিমাণ দ্রব দ্রবীভূত থাকে।
•দ্রবণের আয়তন তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল।
শতকরা সংযুক্তি:
•যৌগের মোট ভরের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট মৌলের শতকরা ভরকে তার সংযুক্তি বলে।
•যৌগে মৌলসমূহের শতকরা সংযুতির সমষ্টি একশত (100) হবে।
•নির্দিষ্ট যৌগে মৌলের শতকরা সংযুতি নির্দিষ্ট হয়। ১ মৌলের বা কোনো নির্দিষ্ট অংশের শতকরা সংযুক্তি নির্ণয়ের জন্য যৌগের আণবিক সংকেত লিখে আপেক্ষিক আণবিক ভর নির্ণয় করতে হবে এবং যৌগে মৌলের শতকরা ভর নির্ণয় করা হয়।
•কেলাস পানি কেলাস গঠনের জন্য অপরিহার্য কিন্তু যৌগের সংকেতের জন্য অপরিহার্য নয়।
•মৌলের সংযুক্তি = ( n × A × 100) / M %
এখানে n = যৌগের আণবিক সংকেতে মৌলের পরমাণুর সংখ্যা, A = মৌলের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর এবং M = আপেক্ষিক আণবিক ভর ।
স্থূল সংকেত:
•যে সংকেত দ্বারা অণুতে বিদ্যমান পরমাণুসমূহের অনুপাত প্রকাশ করে তাকে স্থূল সংকেত বলে।
•অথবা স্থূল সংকেত কোনো যৌগের অণুতে বিদ্যমান মৌলসমূহের পরমাণুগুলোর সংখ্যা যে ক্ষুদ্রতম পূর্ণসংখ্যার অনুপাতে আছে, তার সংক্ষিপ্ত প্রকাশকে যৌগের স্থূল সংকেত বলা হয়।
•অণুতে পরমাণুসমূহের শতকরা সংযুক্তিকে নিজ নিজ আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর দ্বারা ভাগ করে প্রাপ্ত ভাগফলের অনুপাত থেকে স্থূল সংকেত নির্ণয় করা হয়।
স্থূল সংকেত = শতকরা সংযুক্তি / নিজ আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর
যেমন : বেনজিনে (CH) কার্বন (C) ও হাইড্রোজেন (H) পরমাণুর সর্বনিম্ন পূর্ণসংখ্যার অনুপাত 1 : 1 । সুতরাং বেনজিনের স্থূল সংকেত CH স্থূল সংকেত থেকে অণুতে কোনো মৌলের প্রকৃত সংখ্যা জানা যায় না ।
নোট:
•যৌগের আণবিক সংকেত তার স্থূল সংকেতের যে কোনো সরল গুণিতক। কোনো কোনো যৌগের স্থূল সংকেত এবং আণবিক সংকেত অভিন্ন হয়। যেমন : অ্যাসিটিলিন।
•(C₂H₂) ও বেনজিনের (C₆H₆) এর স্থূল সংকেত CH
•যৌগের স্থূল সংকেত CH হলে তার আণবিক সংকেত (CH)ₙ। এখানে, n হলো যৌগে বিদ্যমান
মৌলের পরমাণু সংখ্যা।
রাসায়নিক বিক্রিয়া:
রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংক্ষেপে উপস্থাপন করার জন্য রাসায়নিক সমীকরণ ব্যবহার করা হয়। •রাসায়নিক সমীকরণ হলো রাসায়নিক সর্টহ্যান্ড।
•রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যেসকল পদার্থ নিয়ে শুরু করা হয় তাদেরকে বিক্রিয়ক এবং যেসব পদার্থ উৎপন্ন হয় তাদের উৎপাদ বলে।
•সমীকরণের সমান চিহ্নের উভয় পাশে পরমাণুর সংখ্যা সমান হতে হয়।
•রাসায়নিক বিক্রিয়া ভরের সম্ভাবণ নীতি অনুসরণ করে।
•যৌগের ভৌত অবস্থা কঠিন (Solid) হলে (s), তরল (liquid) হলে (I) এবং গ্যাসীয় ( gaseous) হলে (g) লেখা হয়। বিক্রিয়ক এবং উৎপাদ হিসেবে কোনো যৌগের জলীয় দ্রবণ (Aqueous solution) থাকলে (aq) লেখা হয়।
রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমীকরণ:
রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংক্ষিপ্তরুপে রাসায়নিক সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়।
•রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ক ও উৎপাদ ভরের সম্ভাবণ সূত্র মেনে চলে।
•রাসায়নিক সমীকরণে বিক্রিয়ক পদার্থের বিভিন্ন মৌলের পরমাণু সংখ্যা এবং উৎপন্ন পদার্থের একই মৌলের পরমাণুর সংখ্যা পরস্পর সমান থাকে।
•বিভিন্ন মৌলের পরমাণুর সংখ্যা সমান করার জন্য বিক্রিয়ক এবং উৎপাদের সংকেতের সাথে প্রয়োজনীয় সংখ্যা (2. 3. 4 ) ইত্যাদি দ্বারা গুণন করতে হয়।
রাসায়নিক বিক্রিয়ার শর্ত:
• নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি বিক্রিয়ক অপর একটি বিক্রিয়কের নির্দিষ্ট পরিমাণের সাথে বিক্রিয়া করে।
• নির্দিষ্ট পরিমাণ বিক্রিয়ক থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ উৎপাদ পাওয়া যায়।
•রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমতাকৃত সমীকরণ থেকে বিক্রিয়ক ও উৎপাদের অণুর সংখ্যা, মোল সংখ্যা এবং ভরের হিসাব করা যায়।
• অ্যানালার রাসায়নিক পদার্থসমূহ প্রায় 95.5% বিশুদ্ধ হয়।
•রাসায়নিক পদার্থের বিশুদ্ধতা তার প্রস্তুতি ও বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতির উপর নির্ভর করে।
•কী পরিমাণ উৎপাদ কম পাওয়া যায় তা উৎপাদের শতকরা পরিমাণের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়, উৎপাদের শতকরা পরিমাণ = (বিক্রিয়ায় প্রাপ্ত পরিমাণ × 100) / বিক্রিয়া থেকে হিসাবকৃত উৎপাদের পরিমাণ
•বিক্রিয়কসমূহ 100% বিশুদ্ধ না হওয়ায় উৎপাদের পরিমাণ লিমিটিং বিক্রিয়ক থেকে হিসাবকৃত পরিমাণ থেকে কম হয়।
মোল : কোনো মৌল বা যৌগের পারমাণবিক ভর বা আণবিক ভরকে গ্রামে প্রকাশ করলে তাকে ঐ মৌল বা যৌগের গ্রাম পারমাণবিক ভর বা গ্রাম আণবিক ভর বা একগ্রাম অণু বা একগ্রাম মোল বা সংক্ষেপে মোল বলে।
যেমন : নাইট্রোজেনের আণবিক ভর 28 । আণবিক ভরকে গ্রামে প্রকাশ করলে নাইট্রোজেনের গ্রাম আণবিক ভর 28 গ্রাম হবে। এ 28 গ্রাম ভরের নাইট্রোজেনকে একগ্রাম অণু নাইট্রোজেন বা একগ্রাম মোল নাইট্রোজেন বা এক মোল নাইট্রোজেন বলা হয়।
অ্যাভোগেড্রো সংখ্যা : কোনো বস্তুর এক মোলে যত সংখ্যক অণু থাকে সেই সংখ্যাকে অ্যাভোগেড্রো সংখ্যা বলা হয়। একে N দ্বারা প্রকাশ করা হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা দ্বারা এর মান 6.02 × 10²³
নির্ণীত হয়েছে। অ্যাভোগেড্রো সংখ্যাটি তাপমাত্রা ও চাপের ওপর নির্ভর করে না। কারণ তাপমাত্রা ও চাপের পরিবর্তনের সঙ্গে গ্যাসের আয়তনের পরিবর্তন হয় কিন্তু ভর এবং অণু সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না।
2.016 গ্রাম H₂, 28 গ্রাম N₂ ,32 গ্রাম O₂, 17 গ্রাম NH₃ ,44 গ্রাম CO₂ এর মধ্যে অণুর সংখ্যা 6.02 × 10²³
প্রমাণ তাপমাত্রা ও চাপ : রাসায়নিক বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে 25°C তাপমাত্রাকে প্রমাণ তাপমাত্রা এবং 1 atm বায়ুমণ্ডলীয় চাপকে প্রমাণ চাপ বলে।
মোলার আয়তন : নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে, এক মোল পরিমাণ পদার্থের আয়তনকে গ্যাসটির
মোলার আয়তন বলে। প্রমাণ তাপমাত্রা ও চাপে সব গ্যাসের (মৌলিক বা যৌগিক) মোলার আয়তন 22.4 লিটার।
আণবিক সংকেত : যে সংকেত থেকে একটি মৌলের নির্দিষ্ট সংখ্যক পরমাণু অপর মৌলের কতটি
পরমাণুর সাথে যুক্ত হয় তা জানা যায়, সেই সংকেতকে আণবিক সংকেত বলে।
গ্রাম পারমাণবিক ভর: কোনো মৌলের পারমাণবিক ভরকে গ্রামে প্রকাশ করলে তাকে ওই মৌলের গ্রাম পারমাণবিক ভর বলে।
যেমন : কার্বনের পারমাণবিক ভর 12। সুতরাং, 12 গ্রাম কার্বনে 1 গ্রাম কার্বন পরমাণু আছে।
গ্রাম আণবিক ভর : কোনো মৌল বা যৌগের আণবিক ভরকে গ্রামে প্রকাশ করলে তাকে মৌল বা যৌগের গ্রাম আণবিক ভর বলে।
যেমন : কার্বন ডাইঅক্সাইডের আণবিক ভর 44। কাজেই কার্বন ডাইঅক্সাইডের গ্রাম আণবিক ভর 44 গ্রাম।
মোলার দ্রবণ : নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো দ্রবণের প্রতি লিটার আয়তনে এক মোল দ্রব দ্রবীভূত থাকলে সে দ্রবণকে মোলার দ্রবণ বলে।
সমসত্ত্ব মিশ্রণ: দ্রবণ যেসব মিশ্রণে উপাদানগুলো সুষমভাবে বণ্টিত থাকে এবং একটি উপাদান থেকে আরেকটিকে সহজে আলাদা করা যায় না, তাদেরকে দ্রবণ কে সমসত্ত্ব মিশ্রণ বলা হয়।
দ্রবণের অংশ : প্রত্যেক দ্রবণের দুটি অংশ থাকে দ্রব এবং দ্রাবক। দ্রবণের মধ্যে যে উপাদানটি
কম পরিমাণে থাকে তাকে দ্রব আর যে উপাদানটি বেশি পরিমাণে থাকে তাকে দ্রাবক বলে।
যেমন:পানিতে চিনি মিশালে একটি দ্রবণ তৈরি হয়। এখানে চিনি দ্রব, পানি দ্রাবক এবং মিশানোর পর যা তৈরি হলো তা দ্রবণ ।
রাসায়নিক সমীকরণ: বিক্রিয়ক এবং উৎপাদ পদার্থের পরমাণুগুলোর মধ্যে সমতা বজায় রেখে প্রতীক ও সংকেতের সাহায্যে কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংক্ষেপে প্রকাশ করার পদ্ধতিকে রাসায়নিক সমীকরণ বলে।
যেমন : জিংক কপার সালফেটের সাথে বিক্রিয়া করে জিংক সালফেট ও কপার উৎপন্ন করে। এ বিক্রিয়াকে নিম্নোক্ত সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করা হয় :
Zn + CuSO₄ → ZnSO₄ + Cu
Stoichiometry: রসায়নে অণু পরমাণু বিক্রিয়ক, উৎপাদ ইত্যাদির হিসাব নিকাশকে Stoichiometry বলে।
রাসায়নিক বিক্রিয়া: যে প্রক্রিয়ায় এক বা একাধিক ভিন্নধর্মী পদার্থ পরিবর্তিত হয়ে এক বা একাধিক ভিন্নধর্মী নতুন পদার্থ উৎপন্ন করে তাকে রাসায়নিক বিক্রিয়া বলে। রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে পদার্থের অণুর গঠনের পরিবর্তন ঘটে কিন্তু পদার্থের মূল উপাদান এবং পরমাণু সংখ্যার কোনো পরিবর্তন ঘটে না।
বিক্রিয়ক এবং উৎপাদ : রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পদার্থ বা পদার্থগুলোকে বিক্রিয়ক বলে। বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন নতুন ধর্মবিশিষ্ট পদার্থগুলোকে উৎপাদ বলা হয়। যেমন : জিংক অক্সাইডের সঙ্গে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের বিক্রিয়ায় জিংক ক্লোরাইড এবং পানি উৎপন্ন হয়।
ZnO + 2HCl → ZnCl + H₂O
এ বিক্রিয়ায় ZnO ও HCI হলো বিক্রিয়ক আর ZnCl ও H₂O হলো উৎপাদ।
লিমিটিং বিক্রিয়ক: কোনো একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া সংগঠনকালে একাধিক বিক্রিয়কের মধ্যে যে বিক্রিয়ক অবশিষ্ট থাকে না, তাকে লিমিটিং বিক্রিয়ক বলে। বিক্রিয়ক থেকে উৎপাদের পরিমাণ হিসাব করার সময় লিমিটিং বিক্রিয়কের পরিমাণ থেকে হিসাব করা হয়।
অ্যানালার: সবচেয়ে বিশুদ্ধ রাসায়নিক পদার্থকে অ্যানালার বলে। এদের বিশুদ্ধতা প্রায় 95.5% পর্যন্ত হয়। অ্যানালার কে গবেষণার সময় বিশেষণীয় কাজে ব্যবহার করা হয়।
তুঁতে : কপার সালফেটের আর্দ্র কেলাসকে তুঁতে বলে। যার সংকেত CuSO₄.5H₂O ।এর বর্ণ নীল। আমরা বাজারে কাপড়ের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য যে নীল কিনি তাই তুঁতে। একে বন্ধু ভিট্রিয়ল ও বলা হয়।
কেলাস পানি: যে পানি কোনো একটি যৌগের নির্দিষ্ট কেলাস গঠনের জন্য অপরিহার্য তাকে কেলাস পানি বলে।
যেমন : তুঁতের কেলাস গঠনের জন্য 5 অণু পানি অপরিহার্য। এজন্য তুঁতের সংকেত CuSO₄.5H₂O
এই অধ্যায়ের সকল নোট এর পিডিএফ পেতে এখানে ক্লিক করুন---
Download Now